ভাগে কুরবানী করার বিধান কি?

ভাগে কুরবানী করার বিধান
– শায়খ আখতারুল আমান আবদুস সালাম
একথা সর্বজন বিদিত যে একটি গোটা জান কুরবানী
দেয়াই উত্তম । কারণ একটি গোটা জান কুরবানী
দিলে তা পুরা পরিবারের জন্য যথেষ্ট হয়ে যায়,যদিও
সে পরিবারের সদস্য সংখ্যা সাতেরও অধিক হয়।
পক্ষান্তরে শরীক কুরবানী এর ব্যতিক্রম। ওটাতে যে
শরীক হবে শুধু মাত্র তার পক্ষ থেকেই কুরবানী হবে।
তার পরিবারের পক্ষ থেকে আদায় হবেনা। এক্ষনে উট
ও গরুতে শরীক কুরবানী বৈধ কিনা সে বিষয়ে
আলোকপাত করা যাক।
উট ও গরুতে শরীক হওয়া নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর একাধিক বিশুদ্ধ হাদীছ ও সালাফে
সালেহীনের বাণী দ্বারা সূপ্রমানিত। নিম্নে সে
সম্পর্কে নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এর কতিপয় হাদীছ ও সালাফে ছালেহীনের বাণী

পেশ করা হলঃ
(ক) নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র
হাদীছ দ্বারা কুরবানীতে শরীক হওয়ার প্রমাণঃ
১) হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ : ﻛﻨﺎ ﻣﻊ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻓﻲ
ﺳﻔﺮ ﻓﺤﻀﺮ ﺍﻷﺿﺤﻰ ﻓﺎﺷﺘﺮﻛﻨﺎ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﺳﺒﻌﺔ ﻭﻓﻲ ﺍﻟﺒﻌﻴﺮ ﻋﺸﺮﺓ
অর্থঃ আমরা আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) এর সাথে এক সফরে ছিলাম
এমতাবস্থায় কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হল। তখন আমরা
গরুতে সাত জন ও উটে দশজন করে শরীক হলাম।
(তিরমিযী (হা/১৫০১) বাক্য তিরমিযীর, নাসায়ী
(৭/২২২) ইবনু মাজাহ্ (৩১৩১) আহমাদ (১/২৭৫) হাকিম
(৪/২৩০) মিশকাত হা/১৪৬৯।
২) হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ : ﻛﻨﺎ ﻧﺘﻤﺘﻊ ﻣﻊ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﺑﺎﻟﻌﻤﺮﺓ ﻓﻨﺬﺑﺢ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻧﺸﺘﺮﻙ ﻓﻴﻬﺎ ‏( ﺭﻭﺍﻩ ﻣﺴﻠﻢ
ﺑﺮﻗﻢ ১৩১৮)
অর্থঃ জাবির বিন আব্দুল্লাহ্ (রাঃ) কর্তৃক
বর্ণিত,তিনি বলেনঃ আমরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর সাথে উমরা দ্বারা উপকৃত
হতাম। তখন আমরা একটি গরু সাত জনের পক্ষ থেকে
যবেহ করতাম, এভাবে আমরা তাতে শরীক হতাম। –
মুসলিম (হা/১৩১৮)
৩) হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ : ﻧﺤﺮﻧﺎ ﻣﻊ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ
ﻭﺳﻠﻢ ﻋﺎﻡ ﺍﻟﺤﺪﻳﺒﻴﺔ ﺍﻟﺒﺪﻧﺔ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻭﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ‏( ﻣﺴﻠﻢ
অর্থঃ জাবের বিন আব্দুল্লাহ্ হতে বর্ণিত,তিনি
বলেনঃ আমরা হুদায়বিয়ার সনে উট সাতজনের পক্ষ
থেকে এবং গরু ও সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী
করেছিলাম। (মুসলিম, হা/১৩১৮, অবু দাউদ হা/২৮০৯,
তিরমিযী হা/৯০৪, ইবনু মাজাহ্ হা/৩১৩২)
কেউ কেউ বলে থাকেন যে, কুরবানীতে শরীক হওয়া
সফরের এবং হজ্জের সাথে খাস। কারণ
উপরোল্লেখিত হাদীছ সফরের কথা এসেছে। তাই
বলি, শরীক কুরবানীকে সফরের সাথে খাস করার
পিছনে আমি কোন যুক্ত দেখিনা। কথাটি আমাকে
বেদলীল এবং অযুক্তিক বলে মনে হয়। কারণঃ
(১) উক্ত বর্ণনা গুলিতে সফরের কথা থাকলেও
সেখানে ঘুনাক্ষরেও একথা আসেনি যে, উক্ত শরীক
কুরবানী সফরের সাথেই খাস ও মুকীম অবস্থায় চলবে
না।
(২) মুহাদ্দিসীনে কেরামের অনেকেই উক্ত
হাদীছগুলো সাধারণভাবে কুরবানীর অধ্যায়ে
এনেছেন। কিন্তু তাঁরা বিষয়টিকে সফরের সাথে খাস
করেননি। এ থেকেও বুঝা যায় যে,তারা ঐসব
হাদীছকে এমনি সফর বা হজ্জের সফরের সাথে খাস
হওয়া মনে করেননি।
(৩) হাদীছের ব্যাখ্যাকারগণও এসব হাদীছকে সফরের
সাথে খাস করেননি। যেমন আল্লামা আযীমা
বাদী,শাইখ আব্দুর রহমান মুবারকপূরী। শাইখ
ওবায়দুল্লাহ রহমানী তাঁরা কেউ-ই উক্ত কুরবানীতে
শরীক সম্পর্কিত হাদীছ গুলিকে সফরের সাথে খাস
করেননি।
(৪) সফরের সাথে শরীক কুরবানীকে তা সফরে
সংগঠিত হওয়ার জন্য তার সাথেই খাস করলে যতকিছু
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) ও
ছাহাবায়ে কেরাম কর্তৃক সফরে ঘটেছে তার
সবগুলোকেই ঐ সফরের সাথে খাস করা দরকার। আর এ
অবস্থায় শরীআতের বহু মাসায়েল আমল থেকে বাদ
পড়ে যাবে।
(৫) কুরবানীতে শরীক হওয়া যে সফরের সাথে খাস নয়
তার প্রমাণে আরো একাধিক হাদীছ ও ছাহাবীদের
উক্তি আছে নিম্নে সেগুলো পরিবেশিত হলঃ
হাদীছঃ
ﻋﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ﻗﺎﻝ ﻗﺎﻝ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ :
ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻭﺍﻟﺠﺰﻭﺭ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻓﻲ ﺍﻷﺿﺎﺣﻲ ‏( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﻄﺒﺮﺍﻧﻲ
ﻓﻲ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ ﻭﺍﻷﻭﺳﻂ ﻭﺻﺤﺤﻪ ﺍﻷﻟﺒﺎﻧﻲ ﻓﻲ ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ،
ﺍﻧﻈﺮ : ﺻﺤﻴﺢ ﺍﻟﺠﺎﻣﻊ ﺍﻟﺼﻐﻴﺮ ﺑﺮﻗﻢ ২৮৯০)
আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ হতে বর্ণিত, তিনি বলেনঃ
রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)
এরশাদ করেছেন কুরবানীর ক্ষেত্রে গরুতে সাত জনের
পক্ষ থেকে এবং উটে সাত জনের পক্ষ থেকে (যথেষ্ট)
। [তাবারানীর আল মুজামুস সাগীর, আল মুজামুল
আওসাত, হাদীছটিকে ইমাম আলবানী ছহীহ বলেছেন।
দ্রঃ ছহীহুল জামে, আসসগীর (হা/২৮৯০)]
অত্র হাদীছটি নবীর কওলী (বাচনিক) হাদীছ
যেখানে তিনি সফরের কথা মোটেই উল্লেখ না করে
ব্যাপক ভাবে বলেছেন, কুরবানীর ক্ষেত্রে গরুতে সাত
জনের পক্ষ থেকে এবং উটে সাত জনের পক্ষ থেকে
যথেষ্ট
হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻌﺒﻲ : ﻗﺎﻝ : ﺳﺄﻟﺖُ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ، ﻗﻠﺖُ : ﺍﻟﺠﺰﻭﺭ ﻭﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﺗﺠﺰﺉ
ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻳﺎ ﺷﻌﺒﻲ ﻭﻟﻬﺎ ﺳﺒﻌﺔ ﺃﻧﻔﺲ ؟ ﻗﺎﻝ : ﻗﻠﺖُ : ﺇﻥ
ﺃﺻﺤﺎﺏ ﻣﺤﻤﺪ ﻳﺰﻋﻤﻮﻥ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺳﻦ
ﺍﻟﺠﺰﻭﺭ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻭﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ، ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻟﺮﺟﻞ ﺃﻛﺬﻟﻚ
ﻳﺎﻓﻼﻥ؟ ﻗﺎﻝ : ﻧﻌﻢ، ﻗﺎﻝ : ﻣﺎﺷﻌﺮﺕُ ﺑﻬﺬﺍ
শাবী হতে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ আমি ইবনু ওমার
(রাঃ)কে প্রশ্ন করলাম,বললামঃ উট ও গরু কি সাত
জনের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া যাবে? তিনি
বললেনঃ হে শাবী তার কি সাতটি আত্মা আছে?।
(শাবী বলেন) আমি বললামঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর (অন্যান্য) ছাহাবীগণ তো
বলেন যে, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া
সাল্লাম) উটকে সাত জনের পক্ষ থেকে এবং গরুকেও
সাতজনের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া মাসনুন
(বিধিসম্মত) করেছেন। এতদশ্রবনে ইবনু উমার এক
ব্যক্তিকে বললেনঃ এরকমই কি তারা বলেন হে ওমুক।
লোকটি বললঃ জি, হাঁ। ইবনু উমার তখন বললেনঃ এটা
তবে আমি অনুধাবন করতে পারিনি। (মুসনাদ
আহমাদ,ইমাম হায়সামী বলেনঃ হাদীছটির রিজাল
তথা রাবীগণ ছহীহ (বুখারী ও মুসলিম) গ্রন্থের রাবী।
মাজমাউয যাওয়ায়েদ (৩/২২৬) শাইখ মুস্তফা বিন
আদাবী বলেনঃ হাদীছটির সনদ ছহীহ,দ্রঃ ফিকহুল
উযহিয়্যাহ: ৮৪ পৃষ্ঠার ১নং টীকা)
হাদীছটি মুহাল্লায় ইবনু আবী শাইবার সূত্রে নিম্নরূপ
এসেছেঃ
ﻋﻦ ﺍﻟﺸﻌﺒﻲ ﻗﺎﻝ : ﺳﺄﻟﺖُ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ ﻋﻦ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻭﺍﻟﺒﻌﻴﺮ ﺗﺠﺰﺉ ﻋﻦ
ﺳﺒﻌﺔ ؟ ﻓﻘﺎﻝ : ﻛﻴﻒ ﺃﻭﻟﻬﺎ ﺳﺒﻌﺔ ﺃﻧﻔﺲ؟ ﻗﻠﺖُ : ﺇﻥ ﺃﺻﺤﺎﺏ ﻣﺤﻤﺪ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﺍﻟﺬﻳﻦ ﺑﺎﻟﻜﻮﻓﺔ ﺃﻓﺘﻮﻧﻲ ﻓﻘﺎﻟﻮﺍ : ﻧﻌﻢ ﻗﺎﻟﻪ ﺍﻟﻨﺒﻲ
ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻭﺃﺑﻮ ﺑﻜﺮ ﻭﻋﻤﺮ ﻓﻘﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻋﻤﺮ : ﻣﺎﺷﻌﺮﺕُ ، ﻗﺎﻝ
ﻓﻲ ﻓﻘﻪ ﺍﻷﺿﺤﻴﺔ : ৮৮ ﺻﺤﻴﺢ ﺑﻤﺎ ﻗﺒﻠﻪ ﻳﻘﺼﺪ ﺑﻪ ﺣﺪﻳﺚ ﺃﺣﻤﺪ
ﺍﻟﺴﺎﺑﻖ )
শাবী হতে বর্ণিত,তিনি বলেনঃ আমি ইবনু ওমার
(রাঃ)কে জিজ্ঞাসা করলামঃ গরু ও উট সাত জনের
পক্ষ হতে (কুরবানীতে) কি যথেষ্ট? ইবনু ওমার (রাঃ)
বললেনঃ এটা কিভাবে হবে,ওর কি সাতটি আত্মা
আছে? আমি বললামঃ মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর ছাহাবীগণ যারা কুফায়
রয়েছেন তাঁরা তো আমাকে এই মর্মে ফতোয়া দিয়ে
বলেছেন যে, হাঁ চলবে। নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়া সাল্লাম) আবু বাকর ও ওমার (রা.)ও তাই
বলেছেন। এতদশ্রবণে ইবনু ওমার বললেনঃ আমি তাহলে
এটা অনুভব করতে পারিনি। (হাদীছটি পূর্ব বর্ণিত
হাদীছ দ্বারা বিশুদ্ধ। দ্রঃ ফিকহুল উযহিয়্যাহঃ ৮৮)
অত্র হাদীছেও সফরের কোন উল্লেখই নেই এবং সফর
সংক্রান্ত হাদীছের রাবীও এই হাদীছটির রাবী নয়
কাজেই সেই অযুহাত এখানে চলবে না যে,“একই
রাবীর বর্ণিত সংক্ষিপ্ত হাদীছের স্থলে বিস্তারিত
ও ব্যাখ্যা সম্বলিত হাদীছ দলীলের ক্ষেত্রে গ্রহণ
করাই মুহাদ্দিসগণের সর্বসম্মত রীতি”। এ হাদীছের
পূর্বের যে হাদীছ বর্ণণা করা হয়েছে তার রাবীও
ভিন্ন অর্থ্যাৎ জাবির (রাঃ) নয় বরং আব্দুল্লাহ বিন
মাসউদ। এতদসত্বেও ঐ হাদীছটি মারফু হাদীছ এবং
নবী(সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র বাচনিক
হাদীছ যা ফেলী হাদীছের উপর অগ্রাধিকার
লাভকারী ।
*হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺟﺎﺑﺮ ﺑﻦ ﻋﺒﺪﺍﻟﻠﻪ ﺃﻥ ﺍﻟﻨﺒﻲ ﻗﺎﻝ : ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ﻭﺍﻟﺠﺰﻭﺭ ﻋﻦ
ﺳﺒﻌﺔ
জাবের (রাঃ) হতে বর্নিত নবী বলেন, গরু সাত জনের
পক্ষ থেকে এবং উট সাত জনের পক্ষ থেকে ( কুরবানী
হবে )। (আবূ দাউদ হা /২৮০৮) মিশকাত হা /১৪৫৮)
অত্র হাদীছেও সফরের কোন উল্লেখ নেই। পক্ষান্তরে
ইহা নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)র
কাওলী হাদীছ। তা ছড়াও জাবির কর্তৃক বিস্তারিত
বর্ণনাতেও একথা আদৌ বলা হয়নি ঐ শরীক কুরবানী
সফরের সাথেই খাস ছিল । তাঁরা সফরে থাকাবস্থায়
কুরবানীর ঈদ উপস্থিত হলে তখন কি ঘটেছিল শুধু তাই
বলা হয়েছে অন্য কিছু বলা হয়নি ।
*হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺯﻫﻴﺮ ﺑﻦ ﻳﻌﻨﻲ ﺍﺑﻦ ﺃﺑﻲ ﺛﺎﺑﺖ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖُ ﺍﻟﻤﻐﻴﺮﺓ ﺑﻦ ﺣﺬﻑ
ﺍﻟﻌﺒﺴﻲ ﺳﻤﻊ ﺭﺟﻼ ﻣﻦ ﻫﻤﺪﺍﻥ ﺳﺄﻝ ﻋﻠﻴﺎ ﺭﺿﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻦ ﺭﺟﻞ :
ﺍﺷﺘﺮﻯ ﺑﻘﺮﺓ ﻟﻴﻀﺤﻲ ﺑﻬﺎ ﻓﻨﺘﺠﺖ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻻ ﺗﺸﺮﺏ ﻟﺒﻨﻬﺎ ﺇﻻ ﻓﻀﻼ
ﻭﺇﺫﺍ ﻛﺎﻥ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻨﺤﺮ ﻓﺎﺫﺑﺤﻬﺎ ﻫﻰ ﻭﻭﻟﺪﻫﺎ ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ
অর্থঃ যুহাইর বিন আবূ সাবিত হতে বর্ণিত,তিনি বলেন
আমি মুগীরাহ বিন হাযাফ আল আবসীর কাছ থেকে
শুনেছি তিনি হামদান এলাকায় এক ব্যক্তিকে আলীর
নিকট অপর এক ব্যাক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতে
শুনেছেন,সে কুরবানী দেয়ার জন্য একটি গাভী ক্রয়
করেছে,কিন্ত গাভীটি (ইতমধ্যে ) বাচ্চা প্রসাব করে
ফেলেছে এ ব্যাপারে তার কি করণীয়? আলী (রাঃ)
বললেন, (তাকে বলবে) তুমি শুধু বাচ্চার উদ্বৃত্ত দুধটুকুই
খাবে। আর যখন কুরবানীর দিন আসবে তখন তাকে ও
তার বাচ্চাকে সাত জনের পক্ষ হতে যবেহ করবে।
(বায়হাক্বী (৫/৩৮৮ ) অত্র হাদীছটি সম্পর্কে হাফেয
ইবনু হাজার (রহঃ) বলেন, হাদীছটিকে ইবনু আবী
হাতিম তার ইলাল নামক গ্রন্থে (২/৪৬) উল্লেখ
করেছেন এবং আবূ যুরআ থেকে বর্ননা করেছেন
যে,তিনি বলেছেন, হাদীছটি ছহীহ (দ্রঃ তালখীসুল
হাবীর ৪/১৪৬ )
*হাদীছঃ
ﻋﻦ ﺣﺠﻴﺔ ﺑﻦ ﻋﺪﻱ ﻋﻦ ﻋﻠﻰ ﺃﻧﻪ ﺳﺌﻞ ﻋﻦ ﺍﻟﺒﻘﺮﺓ، ﻓﻘﺎﻝ : ﻋﻦ ﺳﺒﻌﺔ ،
ﻗﺎﻝ : ﻣﻜﺴﻮﺭﺓ ﺍﻟﻘﺮﻥ؟ ﻗﺎﻝ : ﻻ ﺗﻀﺮﻙ ‏( ﺭﻭﺍﻩ ﺍﻟﺒﻴﻬﻘﻲ )
হুজ্জিয়া বিন আদী হতে বর্ণিত,তিনি আলী থেকে
বর্ণনা করেন, তাকে (আলীকে) জিজ্ঞাসা করা হল
গরু সম্পর্কে (ওটা ভাগে কুরবানী দেয়া যায় কিনা?)
তিনি বললেন সাত জনের পক্ষ থেকে কুরবানী দেয়া
যাবে। লোকটি বললঃ শিং ভাঙ্গা গরু কি কুরবানী
দেয়া যাবে? তিনি বললেন ওটা তোমার কোন
অসুবিধা করবে না। (বায়হাক্বি। হাদীছটি ছহীহ, দ্র:
ফিকহুল উযহিয়্যাহ/ ৫৪ )
-শায়খ আখতারুল আমান আবদুস সালাম, লিসান্স
মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়।
সাবেক দাঈ, জুবাইল দাওয়া এণ্ড গেইডেণ্স সেন্টার,
সৌদী আরব, বর্তমান দাঈ, কুয়েত (কুয়েত সিটি)

আপনার মতামত দিন