হিদায়াত ব্যাপারটা অন্তরের স্থায়ী কোন অবস্থা না। জাহেলিয়াত থেকে দ্বীনের বুঝ পেয়ে ইসলামে ফিরে আসা মানেই একটা মানুষ ইসলামে টিকে থাকবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। অনেক মানুষ ইসলামকে পাবার জন্য কঠিন ত্যাগ, পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আসে তো কেউ বা আবার অনেকটা কম চেষ্টায়ই হিদায়াত পেয়ে যায়।

হিদায়াত ব্যাপারটা অন্তরের স্থায়ী কোন অবস্থা না। জাহেলিয়াত থেকে দ্বীনের বুঝ পেয়ে ইসলামে ফিরে আসা মানেই একটা মানুষ ইসলামে টিকে থাকবে তার কোন গ্যারান্টি নেই। অনেক মানুষ ইসলামকে পাবার জন্য কঠিন ত্যাগ, পরীক্ষার মধ্য দিয়ে আসে তো কেউ বা আবার অনেকটা কম চেষ্টায়ই হিদায়াত পেয়ে যায়।
.
আল্লাহ তাআলা যাকে ইচ্ছা তাকে হিদায়াত দান করেন, অন্তর্চক্ষু খুলে দিয়ে এই জীবনটাকে কোন দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখা উচিত তা হাতে কলমে অদৃশ্য উপায়ে শিখিয়ে দেন। কিন্তু এই হিদায়াত মানেই, ঈমান নিয়ে মরতে পারার আগাম সার্টিফিকেট নয়।
.
একটা ভাব সম্প্রসারণ ছোটবেলায় আমরা পড়েছিলাম, স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে স্বাধীনতা রক্ষা করা কঠিন। হিদায়াতের ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা তাই ই। হিদায়াত পাওয়া কঠিন তা সত্য, তবে সেই হিদায়াত নিয়ে প্রতি মুহূর্ত টিকে থাকা এবং তা নিয়ে মৃত্যুবরণ করতে পারা এক বিশাল চ্যালেঞ্জ। ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকালে এমন অজস্র নজির পাওয়া যাবে, যেই লোকটাকে মানুষ আল্লাহর অনেক নিকট বান্দা ভাবতো সেও দ্বীন থেকে ফিরে গেছে, শয়তানের কোন ধোঁকায় পড়ে, বা নফসের ক্রমাগত অনুসরণ করতে করতে!
.
আত্মার পরিচর্যা এক চলমান প্রক্রিয়া,
তিন বেলা না খেলে যেমন আমাদের হয়না, তেমনি আত্মাকে প্রতিনিয়ত ইবাদত (বাধ্যতামূলক এবং ঐচ্ছিক) না খাওয়ালে আত্মা দুর্বল হয়ে পড়ে। কাপড়ে ময়লা লাগার সাথে সাথে না ধুলে যেমন দাগ বসে যায়, তেমনি পাপের দাগ অন্তরে পড়লে তা না তওবা করে ফিরে আসলে অন্তরকে অনুভূতিহীন করে তোলে ধীরে ধীরে।
.
লাগাতার গোপন পাপ করতে থাকলে, তওবার শর্ত পূরণ না করলে হিদায়াতপ্রাপ্ত আত্মাও এক সময় শূণ্য হয়ে পড়ে, উপলব্ধি ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে, পাপে মজে যায়, ইবাদতের স্বাদ চলে যায়, আল্লাহর বড়ত্ব, তার সাথে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে এক অদ্ভূত অবস্থায় পরিণত হয়।
দু:খের ব্যাপার হলো, হিদায়াতের ফলে তার যে বাহ্যিক পরিবর্তন এসেছিল, তা দেখে মানুষ তাকে বড় পরহেজগার, মুত্তাকী মনে করতে থাকে। অথচ সেই মানুষটা ভেতরে ভেতরে পরাজিত সৈনিকের মত হার মানতে মানতে অন্তরের দ্বীনি পরিবেশ হারিয়ে ফেলে।
.
এমন করুণ অবস্থায়, সে যদি সব ছেড়েছুড়ে ফিরে না আসে, খাটি তওবা না করে তবে হয়তো এক সময় সে হিদায়াত হারিয়ে আবারো সেই জাহান্নামী গন্তব্যের দিকে ফিরে যায়! এর চেয়ে বড় হতভাগা আর কে হতে পারে, যাকে আল্লাহ হিদায়াত দিয়েছেন আর সে নিজ হাতে গলা টিপে সেই হিদায়াত হত্যা করে স্বেচ্ছায় জাহান্নাম কে বেছে নিয়েছে!
.
ওগো, আল্লাহ কখনো যেনো এমন লোকদের অন্তর্ভুক্ত না করো, যারা হিদায়াত পেয়ে নিজেদের নফসের দাসত্বে হিদায়াত হারিয়ে তোমার ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে গেছে। “ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলুব সাব্বিত ক্বালবি, ‘আলা দ্বীনিক!
.
প্রতিটা মুহূর্ত এক একটা সুযোগ বা এক একটা ফাঁদ, আল্লাহর কাছে যাওয়ার বা আল্লাহর কাছ থেকে দূরে ছিটকে পড়ার! আল্লাহ, হিদায়াত যখন দিয়েছো, হিদায়াতসহ ঈমান নিয়েই যেনো মরতে পারি। তুমি ছাড়া এই অস্তিত্ব অর্থহীন!
_____
.
.
দ্বীনের উপর সবসময় অটল থাকার দু’আঃ

‏”‏ يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِينِكَ ‏”‏
উচ্চারণঃ “ইয়া মুকাল্লিবাল কুলুব, সাব্বিত কলবি আ’লা দ্বীনিক”
অর্থঃ “হে অন্তরসমূহের পরিবর্তনকারী! আমার অন্তরকে তোমার দ্বীনের উপর সুদৃঢ় করে দাও।” (তিরমিযি, হা/২১৪০; ইবনু মাজাহ, হা/৩৮৩৪)
কপি পোষ্ট

আপনার মতামত দিন