শবে বরাত নামে পরিচিত(লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানে) আমরা কি করতে পারি? 

শবে বরাত নামে পরিচিত(লাইলাতুন নিসফি মিন শাবানে) আমরা কি করতে পারি?
====================
প্রথম কথা হলো শবে বরাত ফারসি শব্দ, শবে বরাত নামে যে ভাগ্য রজনী মনে করা হয়, এই নামে কুরআন হাদিসে কোন কিছু নেই। লাইলাতুন নিসফি মিন শাবান বা শাবানের মধ্যরাত্রির ব্যাপারে বেশ কিছু হাদিস বর্ণিত হয়েছে, বেশীরভাগ মুহাদ্দিস হাদিসগুলোকে বানোয়াট ও দুর্বল বলেছেন। সৌদিআরবের সন্মানিয় বিগত গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ বিন বাজ (রঃ) বলেন, এ ব্যাপারে বর্ণিত কোন হাদিসই বিশুদ্ধ নয়। বিপরীতে কিছু মুহাদ্দিস নিম্নে বর্ণিত হাদিসটিকে কেউ হাসান আবার কেউ সহিহও বলেছেন-
আবু মূসা আল আশ’আরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ ‘আল্লাহ তা‘আলা শাবানের মধ্যরাত্রিতে আগমণ করে, মুশরিক ও ঝগড়ায় লিপ্ত ব্যক্তিদের ব্যতীত, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিজগতকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ-হাদীস নং ১৩৯০, তাবরানী মু’জামুল কাবীর)

#লক্ষণীয় যে, এই হাদিসটা যদি সহিহও ধরে নেওয়া হয় তাহলেও এই হাদিস আমাদের কি নির্দেশনা দিচ্ছে? হাদিসে স্পষ্ট বলা হয়েছে- আল্লাহ তা’লা এ রাত্রে সকলকে ক্ষমা করে দেন শুধুমাত্র ক্ষমা করেননা যারা শির্ক করে ও যারা হিংসা-বিদ্বেষ করে বা ঝগড়ায় লিপ্ত থাকে। সুতরাং আপনি যদি আমল করতেই চান তবে আপনার জন্য আমল এই যে, আপনাকে শির্ক আর হিংসা-বিদ্বেষ থেকে মুক্ত থাকতে হবে, অথচ আপনি হাদিসে বর্ণিত আমল না করে মনগড়া ভাবে সলাত আদায় এবং সিয়াম পালন শুরু করলেন, কে দিলো এগুলো করার অনুমতি? আল্লাহ ও তার রাসুল(সাঃ) থেকে আপনার কাছে কোন অনুমোদন আছে কি এগুলো করার? শবে বরাত বিষয়ে বর্ণিত সব জাল-জইফ হাদিসের মধ্যে এই হাদিসটিকে কিছু মুহাদ্দিস গ্রহণযোগ্য বলেছেন কিন্তু এই হাদিস দ্বারা সলাত আদায় করা বা সিয়াম পালন করা বা অন্যান্য ইবাদত করার কোনই প্রমাণ আছে কি? সুতরাং এগুলো না করে শির্ক আর হিংসা-বিদ্বেষ থেকে দূরে থাকুন তাহলে এ রাত্রে আল্লাহ তা’লা আপনাকে ক্ষমা করে দিবেন ইন-শা-আল্লাহ আর যদি আপনি এ রাত্রে বিদাতে লিপ্ত হন তবে জেনে রাখুন, বিদাতকারীদের পরিণাম শুভ নয়।

আপনার মতামত দিন